Earthquake warning in contruction

Earthquake warning in contruction

প্রতি বছরই আমরা কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হই। ভূমিকম্প তার মধ্যে অন্যতম।ভূমিকম্পের মাত্রা বেশি হলে অনেক নির্মাণ কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এক্ষেত্রে কষ্টের টাকার নির্মাণ কাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য ভবন নির্মাণের শুরুতেই ভূমিকম্পের কথা মাথায় রেখে কাঠামো কে মজবুত করে নির্মাণ করা অতীব জরুরী। ভূমিকম্পের তীব্রতা ওপর নির্ভর করে পুরো বাংলাদেশকে চারটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে Zone—৩ এবং Zone—৪ যথাক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। Zone —৩ এর আওতায় রয়েছে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রংপুরসহ মধ্যাঞ্চল। এবং Zone —৪ এর আওতায় রয়েছে শেরপুর, বৃহত্তর সিলেট, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এবং কিশোরগঞ্জ।

বাংলাদেশে ভূমিকম্প প্রবন এলাকা

নির্মাণকাজে ভূমিকম্পের প্রস্তুতিঃ

আমাদের অবশ্যই উচিত নির্মাণ কাজ করার সময় ভূমিকম্প প্রতিরোধের জন্য কিছু প্রস্তুতি নেয়া।

  • ফাউন্ডেশন অনুযায়ী এমন সাইজের রড ব্যবহার করতে হবে যা ভূমিকম্পের ধাক্কা নিতে পারবে। যেমন: Xtreme B500, DWR,60 Grade,40 Grade বারগুলো অধিক শক্তিশালী।
  • বাইন্ডিং এর শেষ মাথায় ১৩৫ ডিগ্রি কোণে বাঁকা করে দিতে হবে বাঁধন খুলে ভেতরে ফাঁকা কম হবে।
  • বহুতল ভবনে লিফটের দেওয়াল কংক্রিটের এবং ডিজাইন অনুযায়ী হবে।
  • মাটি পরীক্ষা করে কোন ধরনের ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্মাণ কাজ করতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে।
  • বীম এবং কলামের সংযোগস্থল একত্রে জোড়া লাগানো যাবেনা।
ভূমিকম্পে ভবনের ক্ষয়ক্ষতি

ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কম রাখার উপায়ঃ

  • কংক্রিট এর পাশাপাশি স্টিল দিয়েও কিছু কাঠামোকে জোর প্রদান করতে হবে।
  • নরম মাটি হলে অবশ্যই মাটির পরীক্ষা করতে হবে।
  • দেওয়াল মজবুত করার জন্য ক্রসড্রেসিং ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • দেওয়ালের মত বিমান ক্রসড্রেসিং দেয়া যেতে পারে লিস্ট থেকে।
  • কলমের সাইজ বৃদ্ধি করে শক্তিশালী করতে হবে।
  • টানা লিংকটা দিতে হবে।

যথাযথ নির্মাণ বিধিমালা চলুনঃ

বিএনবিসি কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করলে রিখটার স্কেল ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ভবন নিরাপদ থাকবে।

  • ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কম রাখা যায় যেভাবে।
  • খুব ভারী যন্ত্রপাতি আপনার ফ্লোরে রাখার পূর্বে চিন্তা করুন যে আপনার বিল্ডিং এর ধারন ক্ষমতা আছে কিনা। পার্কিং ফ্লোরে শক্ত ও মজবুত দেওয়াল নির্মাণ করুন এতে করে ভবনের লোড দেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
  • প্রত্যেকটা ফ্লোরের লোড বহন ক্ষমতার মধ্যে একটা সামঞ্জস্যতা আসে অবশ্যই এটা মেনে চলুন। নির্মাণের সময় সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নির্মাণ হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন বা প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসা করুন কারণ তারা বিষয়টা সম্পর্কে পূর্বে অবগত।
ভূমিকম্প চলাকালীন জনসতর্কতা

ভূমিকম্পের সাধারণ সতর্কতাঃ

  • ভূমিকম্পের কোনভাবেই লিফট ব্যবহার করা যাবে না।
  • ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সকল প্রকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন যেমন বিদ্যুতের মেইন সুইচ গ্যাসের লাইন ইত্যাদি।
  • ভূমিকম্প চলাকালীন সময়ে ভবনে থাকলে অবশ্যই কলাম বা বিমের নিচে আশ্রয় গ্রহণ করুন অথবা শক্ত খাট বা টেবিলের নিচে অবস্থান করুন।
  • ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব ভবন থেকে বের হয়ে ফাঁকা স্থানে অবস্থান করুন।
  • ভবন ত্যাগ করার ক্ষেত্রে যদি এমারজেন্সি এক্সিট থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন।
  • ভবন বা বাসা বাড়ি নির্মাণের সময় ইলেকট্রিক লাইন এবং গ্যাস লাইন নিরাপত্তা ও সর্তকতা বিধি মেনে বসান।
  • ভূমিকম্প চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তা পোশাক হিসেবে হেলমেট থাকলে পরিধান করুন।

ছবির উৎসঃ গুগল

মোঃ জসীম উদ্দীন

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর ( সিভিল)

ড্যাফোডির পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

Tags: No tags

Comments are closed.