blowg-web-architecture-colours

স্থাপত্যিক ডিজাইনে রঙের প্রয়োজনীয়তা

আলো এবং রঙ একে অপরের পরিপূরক। কোন বস্তুতে আলোর যে রঙটি প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে সেই রঙটি আমরা দেখতে পাই।

স্থাপত্য ডিজাইনে সাধারণত রঙ সহযোগী হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি বস্তুর নিজস্ব চরিত্র অনুযায়ী নিদিষ্ট রঙ আছে। স্থাপত্য ডিজাইনে ইমারতের বাহিরে এবং অভ্যন্তরে সুন্দর ভাবে সজ্জিত করার জন্য রঙ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রঙ ব্যবহার করার জন্য কোন নিয়ম মানতে হয় না, একজন স্থপতি তার ডিজাইনকে সুন্দর ভাবে সজ্জিত করার জন্য রঙ ব্যবহার করে থাকেন।বয়সের ক্রম অনুসারে রঙ পছন্দের  মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন -কিশোর, যুবক, বৃদ্ধের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায় আবার একজন ছেলে ও মেয়ের মধ্যে ও রঙ পছন্দের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। এক এক বয়সের মানুষ এক একটি রঙের প্রতি আসক্ত থাকেন।

   চিএঃ কালার হুইল

                                                           

বিভিন্ন ধরনের রঙের তালিকা

সাধারণত রঙকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। তা হল-

১) প্রাথমিক রঙ

২) মাধ্যমিক রঙ

৩) টারশিয়ারি রঙ

প্রাথমিক রঙঃ

লাল,নীল এবং হলুুদ এই তিনটি রঙকে প্রাথমিক রঙ বলা হয়।এই তিনটি রঙ অন্য যে কোন রঙের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব নয়, অন্যান্য যত রঙ আছে,  তা সবই এই তিনটি রঙের মাধ্যমে তৈরি হয়ে থাকে।

মাধ্যমিক রঙঃ

সবুজ, কমলা এবং বেগুনি এই রঙগুলো হল মাধ্যমিক রঙ।এই রঙগুলো প্রাথমিক রঙের সংমিশ্রণে তৈরি। যেমন- লাল এবং নীল মিশিয়ে বেগুনী,  নীল এবং হলুদ মিশিয়ে সবুজ, হলুদ এবং লাল মিশিয়ে কমলা।

টারশিয়ারি রঙঃ

এই রঙগুলো প্রাথমিক রঙ এবং মাধ্যমিক রঙের সমন্বয়ে তৈরি হয়ে থাকে। বিভিন্ন টারশিয়ারি রঙগুলো হল-

লাল+কমলা = লাল-কমলা

কমলা+হলুদ = হলুদ -কমলা

হলুদ+সবুজ =হলুদ -সবুজ

সবুজ +নীল= নীল- সবুজ

উপরে উল্লেখিত রঙ ছাড়া আরো অনেক রঙ আছে

   চিএঃ কালার হুইল

রঙের ভাষা

রঙ মানুষের মনের উপর প্রভাব ফেলে। রঙ মানুষের মনে যেমন উত্তপ্ততার অনুভূতি জাগাতে পারে, তেমনি শীতলতার অনুভূতি ও জাগাতে পারে। নিচে বিভিন্ন রঙের ভাষা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো-

সাদা রঙঃ

সাদা রঙ মানুষের মনে পবিত্রতার ভাব নিয়ে আসে এবং  সব সময় মনে শান্তি ভাব আনে।

কালো রঙঃ

কালো রঙ মানুষকে শোকাভিভূত করে তোলে। বিভিন্ন দেশে কারোর মৃত্যু হলে তারা কালো পোশাক পরিধান করে। কালো রঙ শোকের প্রতীক।

লাল রঙঃ

লাল রঙ রক্ত, আগুন, উদ্যম,সাহস,হিংসা, যুদ্ধ, শক্ত, গতি ইত্যাদির প্রতীক হিসাবে কাজ করে। গাঢ় লাল রঙের ব্যবহার মানুষকে অস্বস্থিকর করে তোলে।

হলুদ রঙঃ

হলুদ রঙ আনন্দময়, আশাবাদী, সচ্ছলতা ও সফলতার প্রতীক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ও হলুদ রং মানুষকে সম্ভ্রমপূর্ণ মানসিকতা সৃষ্টিতে সাহায্য করে।

সবুজ রঙঃ

সবুজ রঙ শান্তি, প্রশান্ত, সজীবতা, তৃপ্তি, ঠান্ডা ও নরম ইত্যাদির প্রতীক হিসেবে কাজ করে। সবুজ রঙ আমাদের চোখকে আরাম দেয়।

কমলা রঙঃ

লাল ও হলুদের সংমিশ্রণে কমলা রঙ তৈরী করা যায়। এটি আনন্দ, আতিথ্য, আশা ও আন্তরিকতা প্রকাশ করে।

বেগুনি রঙঃ

লাল ও নীল রঙের সংমিশ্রণে তৈরী। এটি অনিশ্চয়তা,বৈষম্য ও রহস্যময়তা প্রকাশ করে।

গোলাপি রঙঃ

সাদা ও সামান্য লাল রঙের মিশিয়ে এই রঙ তৈরী করা হয়। গোলাপি রঙ আনন্দ আতিশয্যের সৃজনশীল রঙ। এ ধরনের রঙ সাধারণত মেয়েদের কাছে খুব পচ্ছন্দের বলে মনে করা হয়ে থাকে। এইজন্য এই রঙকে মেয়েলি রঙ ও বলা হয়ে থাকে।

নীল রঙঃ

নীল রঙ ঠান্ডা ভাব অনুভব করে।এছাড়া ও নীল রঙ প্রশস্ততা, বিশ্রাম, সৌম্যতা ও মনকে সংযত নরম রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে কম বয়সী ছেলেরা এই রঙ টি খুব পচ্ছন্দ করে থাকে।

স্থাপত্যিক ডিজাইনে রঙের ব্যবহার

ক) ইমারতের বাহিরের দেয়ালে যদি গাঢ় রঙ ব্যবহার করা হয়, তবে ইমারতটিকে একটি ঘনবস্তু বলে মনে হবে।

খ) ইমারতের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রঙ ব্যবহারের ফলে সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়। যা ব্যবহারকারীদের জন্য সুন্দর ও সাচ্ছন্দ্যময় হবে।

গ) ইমারতের অভ্যন্তরে দেয়ালে গাঢ় রঙ ব্যবহার করলে রুমটি অনেক ছোট দেখায় আবার হালকা রঙ ব্যবহার করলে রুমটি তুলনামূলক অনেক বড় দেখায়।

এইজন্য ইমারতে রঙ ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখতে রঙটি যেন চোখের জন্য আরামদায়ক ও শান্তিময় হয়।

                                                                                                                  চিএঃ গুগল থেকে সংগৃহীত

লেখিকা

শান্তা ইসলাম

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

Tags: No tags

Add a Comment

You must be logged in to post a comment