পরমাণুর মডেল সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী তাদের নিজস্ব পরীক্ষালব্ধ মতবাদ প্রদান করেছেন । তাদের এই মতবাদগুলো পরমাণুর মডেল নামে পরিচিত। আজকে আমরা পরমাণুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মডেল রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল নিয়ে আলোচনা করব।
১৯১১ সালে বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড তার আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষার মাধ্যমে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করেন। যা পরবর্তীতে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল নামে পরিচিতি লাভ করে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/07/rutherford-gold-foil.png)
এই মডেল সম্পর্কে তিনি যা যা বলেন-
১. পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে একটি ভারী বস্তু বিদ্যমান। যাকে তিনি পরমাণুর কেন্দ্র/ নিউক্লিয়াস নামে অভিহিত করেন।
২. একটি পরমাণুর মোট আয়তনের তুলনায় তার নিউক্লিয়াসের আয়তন খুবই ছোট। যেমন আমাদের দেহের মোট আয়তনের তুলনায় মস্তিষ্কের আয়তন খুবই নগণ্য।
৩. পরমাণু সামগ্রিকভাবে চার্জ নিরপেক্ষ হয় কারণ একটি পরমাণু তে যে পরিমাণ ধনাত্মক চার্জ রয়েছে ঠিক তার সমপরিমাণ বিপরীত ধর্মী ইলেকট্রন রয়েছে।
৪. সূর্যের চারদিকে যেমন বিভিন্ন গ্রহ গুলো ঘুরছে ঠিক তেমনি একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রন গুলো ঘুরছে । পরমাণুর এরূপ আচরণের জন্য রাদারফোর্ড তার মডেলটিকে সৌর মডেল বলে বিবেচনা করলেন।
৫. ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট নিউক্লিয়াস ও ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রনের মধ্যে একটি স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল বিদ্যমান। এ আকর্ষণ বল ও ঘূর্ণনের ফলে তৈরি কেন্দ্রবিমুখী বল সমান। ফলে পরমাণুটি স্থিতিশীল হয়।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/07/rutherford-atomic-model.png)
রাদারফোর্ডের পরমাণুর মডেলেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
১। এ মডেলের সাহায্যে পরমাণুর বর্ণালির কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।
২। এ মডেলে ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার ও আকৃতি সম্পর্কে কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি।
৩। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল শুধু একটি ইলেকট্রন কিভাবে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘোরে, তা বর্ণনা করতে পারলেও একাধিক ইলেকট্রন কিভাবে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরবে তা বর্ণনা করতে পারেনি।
৪। ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ সম্পর্কে কোনো ধারণা দেয়নি।
৫। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলে পরমাণুর নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনকে সৌরজগতে সূর্য ও গ্রহের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু সৌরজগতের সূর্য ও গ্রহগুলো সাধারণ চার্জনিরপেক্ষ। অন্যদিকে পরমাণুর নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন চার্জযুক্ত। তাই চার্জহীন বস্তুর সঙ্গে চার্জযুক্ত বস্তুর তুলনা করা ঠিক হয়নি।
Ref. Link- https://www.youtube.com/watch?v=TbAa9K41PVM
লেখক
মোঃ আলামিন হোসেন
লেকচারার
ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট