Search Engine Optimization (SEO) এর জন্য বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানো অতন্ত জরুরী । তাই যেকোনো ওয়েবসাইট কে গুগোলের নাম্বার অন পেজ এ নিয়ে আসতে অনেক গুলো SEO টেকনিক এর মধ্যে বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানো হয় । SEO নিয়ে ধারাবাহিক ব্লগের জন্য “ বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমিয়ে গুগল এ নাম্বার ওয়ান হওয়ার উপায় “ বিষয় টি বেছে নিয়েছি। আমি মনে করি বিষয় টি যুগ উপ যুগী- তাই যারা ওয়েবসাইট কে গুগল এর প্রথম পেজ এ আনতে চান বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানোর উপায় জানা থাকলে সহজে গুগল এর প্রথম পেজ এ আনতে পারা যায়। বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানোর বিষয়টি যেমন টি কর্পোরেট ওয়েব সাইট এর জন্য প্রোয়জন তেমনটি বাক্তি গত ওয়েব সাইট এর জন্য ও প্রয়োজন।
একটি ওয়েবসাইট সঠিক ভাবে চলছে কিনা এটি বিবেচনা করার অন্যতম একটি মাধ্যম ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট (Bounce Rate)। ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট দেখে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যেতে পারে যে, সাইট টি কেমন করছে এবং ভবিষৎ এ কেমন করবে। চলুন জেনে নেই বাউন্স রেট কি?
বাউন্স রেট (Bounce Rate) ?
গুগল এ্যানালাইটিক্স এর একটি অন্যতম মেট্রিক হল বাউন্সরেট । বাউন্স এর সাথে বাউন্সরেট এর সম্পর্ক তাই বাউন্স বোঝার আগে বাউন্স কি? তা একটু বুঝে নেই।
যখন কোন ওয়েবসাইটে ভিজিটর প্রবেশ করে এবং সে ঐ সাইট এ থাকাকালীন সময়ে ওয়েবসাইটের সাথে কোনো প্রকার এনগেজমেন্ট এ যায় না অর্থাৎ, ভিজিটর অন্য কোনো বাটন এ ক্লিক করে না, অন্য কোনো পেজের লিংকে ক্লিক করে না, অন্য কোন মেনুতে ক্লিক করে না, অন্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই সরাসরি ওয়েবসাইট থেকে বের হয়ে আসে। তখন ভিজিটর এর জন্য গুগল এ্যানালাইটিক্স এর সার্ভার ঐ ভিজিটরের কাছ থেকে কোনো প্রকার ট্রিগার লাভ করে না। এটি ক্রিকেট এর বল বাউন্স এর মত হঠাৎ লাফিয়ে ওঠার মত, ভিজিটর এভাবে অল্প সময়ের জন্য কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করার ফলে গুগল এ্যানালাইটিক্স এ শুধুমাত্র একটি পেজ ভিজিট কাউন্ট হয়। এটিকেই বাউন্স (Bounce) বলে।
তাহলে বাউন্সরেট কি?
উদাহরণস্বরূপ, যদি 100 জন লোক হোমপেজে এ প্রবেশ করে এবং এই লোকগুলির মধ্যে 50 জন অন্য কোনও ওয়েবপেজ না দেখে চলে যায় তবে হোমপেজের বাউন্স রেট 50% হবে।
সুত্রটি হবে,
বাউন্সরেট = (১ টি পেজ ভিজিট করে বের হয়ে যাওয়া ভিজিটর এর সংখ্যা / ঐ পেজ এর মোট ভিজিটর সংখ্যা ) * ১০০
বাউন্সরেট = (৫০/১০০)*১০০ = ৫০%
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/boune-rate.png)
অর্থাৎ ঐ ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট ৫০%। নিচে বাউন্সরেটের একটি স্ক্রিনশট দেয়া হলো, যেটি কোন গুগল এনালিটিক্স টুল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/analytics.png)
স্টান্ডার্ড বাউন্স রেট কত % ?
এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে আমরা কি টার্গেটে কাজ করবো? আমাদের ওয়েবসাইটের বাউন্সরেটের স্টান্ডার্ড কিরকম হওয়া উচিত? ইন্ডাস্ট্রি ভেদে বাউন্সরেটের স্টান্ডার্ড বেশি কম হয়ে থাকে যেমন:
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/standard-bounce-rate.png)
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/boune-rate-benchmark.png)
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/lead-generation.png)
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/boune-rate-benchmark-2.png)
আমি মনে করি, যেকোনো ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে ৩০% বাউন্স রেট হওয়াটা সহনীয়। এমনকি ৪০-৫৫% বাউন্সরেট ও এভারেজ হিসেব আমার মনে হয়। তবে সাইটের বাউন্সরেট যদি ৬০% এর বেশি হয় তবে এটা চিন্তার বিষয় এবং ঐ ওয়েবসাইট নিয়ে তাহলে SEO এর কাজ করা উচিত।
বাউন্স রেট বেশি হলে কি হয় ?
যদি সাইটের বাউন্স রেট বেশি হয় তাহলে কি হতে পারে? খুব সাধারন একটা ব্যাপার চিন্তা করুন। গুগল সব সময়ই চায় সার্চ কোয়েরিতে সব থেকে রিলেভেন্ট রেজাল্ট টাকে দেখাবে। যদি কোন ওয়েবসাইটের বাউন্সরেট হয় ৮০% তার মানে অধিকাংশ ভিজিটর ঐ সাইটে প্রবেশ করে সাথে সাথেই আবার বের হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সে কাংখিত রেজাল্ট টি পায়নি। গুগল তখন বুঝতে পারে এই সার্চ কোয়েরির জন্য আপনার ওয়েবপেজটি আপ টু দা মার্ক না। তখন গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টে পেছনে ফেলে অন্য ওয়েবসাইট কে যায়গা দিবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/boune-rate-2.png)
আবার যদি উল্টোটা হয়, অর্থাৎ বাউন্সরেট যদি ৩০% হয় তারমানে ঐ পেজে ভিজিটর প্রবেশ করে আরো কিছু পেজ ভিজিট করছে। তাহলে গুগল বুঝতে পারে যে ভিজিটর তার কাংখিত রেজাল্ট টি খুজে পেয়েছে। অর্থাৎ কম বাউন্সরেট সার্চ ইঞ্জিনকে এই জিনিসটা বুঝাতে সমর্থ হয় যে সার্চ কোয়েরির জন্য এই রেজাল্ট টি রিলেভেন্ট।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/boune-rate-3.png)
ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানোর উপায়
০১. ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড
লোডিং স্পিড, ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কোনো ওয়েবসাইট ৩ সেকেন্ডের মধ্যে লোড না নিলে ৩০% ভিজিটর ওই পেজ ভিজিট না করেই চলে যায়। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমাতে হলে শুরুতেই ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের নিচে নিয়ে আসতে হবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/website-loading-speed.png)
০২. কন্টেন্ট লেখার ব্যাপারে অধিক সতর্ক থাকা
অনলাইন এবং SEO নিয়ে আমরা যারা কাজ করি তারা এই টার্ম টির সাথে খুব পরিচিত যে “Content is King” পুরো ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।যে কোন সাইটের কন্টেন্ট ভালো হলে ডিজাইন কোয়ালিটি মোটামুটি মানের হলেও ভিজিটর সাইটে থাকবে।
তাই কন্টেন্ট লেখার সময় সতর্ক থাকা উচিত। কঠিন এবং দূর্বোধ্য শব্দ এড়ি চলা, এর সাথে লেখা সহজ ভাবে লেখা উচিত। তা না হলে ভিজিটর পোষ্ট পড়ে বিরক্ত হয়ে চলে যেতে পারে। যার ফলে সাইটের বাইন্সরেট বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/content.png)
বিষয়বস্তুকে কম ভীতি প্রদর্শন করার জন্য কিছু উপায় অবলোকন করা যেতে পারে :
- শিরোনামের যথাযথ ব্যবহার
- ঘন ঘন সাবহেডিংস
- উপযুক্ত চিত্র
- বুলেটযুক্ত তালিকা
০৩. ইরিলেভেন্ট কীওয়ার্ড ব্যবহার না করা
একটা সময় ছিলো যখন ব্লাক হ্যাট টেকনিক ইউজ করে ইরিলেভেন্ট (অপ্রাসঙ্গিক) কীওয়ার্ডে সাইট র্যাংক করানো যেতো। এটা এখনো যায়, তবে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ধরা যাক, অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কিত একটি ব্লগ নিয়ে কাজ করছেন, কারো কাছে শুনলেন হেলথ রিলেটেড প্রোডাক্ট সেল করলে বেশ ভালো লাভ করা সম্ভব। এরপর যদি আপনি আপনার অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কিত ব্লগে হেলথ রিলেটেড কন্টেন্ট পোষ্ট করেন তাহলে হিতে বিপরিত হওয়ার সম্ভবনা ১০০%। কারন ভিজিটর আপনার ব্লগে আসবে অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে এসে হেলথ সম্পর্কিত লেখা দেখলে ভিজিটর বাউন্সব্যাক করে চলে যাওয়ার সম্ভবনাই বেশি। এর ফলে আপনার বাউন্সরেট বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/keyword.png)
০৪. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
ইউজার এক্সপেরিয়েন্স যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ন। পুরো সাইটের ডিজাইন অবশ্যই ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়া চাই। যাতে করে একজন ভিজিটর কোনো ঝামেলা ছাড়াই ওয়েবপেজটি নেভিগেট করতে পারেন। কোনো কারনে ইউজার ইন্টারফেস খারাপ হলে ভিজিটর বেশি সময় ঐ পেজে থাকবে না, যার ফলে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বেড়ে যাবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/user-experience.png)
০৫. ইন্টার্নাল লিংকিং তৈরি করা
ভিজিটরকে সাইটে বেশি সময় আটকে রাখার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ইন্টার্নাল লিংকিং। ধরা যাক, কোন ওয়বেসোইটে SEO ক্যাটাগরিতে ৪টা পোষ্ট।
- বেসিক এসইও
- আউটরিচ
- গেষ্টপোষ্ট
- ব্যাকলিংক
এখন যদি বেসিক SEO আর্টিকেলে রিলেভেন্ট ওয়েতে লিংক তৈরি করা, অন্যপোষ্টগুলো যেমন আউটরিচ, গেষ্টপোষ্ট এবং ব্যাকলিংকের পোষ্ট গুলো ইন্টার্নাল লিংক করে দিলে। এরফলে যেটা হবে, ভিজিটর বেসিক SEO এর পাশাপাশি অণ্য ব্যাপার গুলো সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী হয়ে লিংকে ক্লিক করবেন এবং আরো বেশি সময় সাইটে থাকবেন।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/internal-link.png)
০৬. অতিরিক্ত অ্যাড ব্যবহার না করা
বিজ্ঞাপন জিনিসটা সবসময়ই বিরক্তিকর। আপনি নিজের কাছেই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। বিজ্ঞাপন দেখতে আপনার কেমন লাগে? অবশ্যই উত্তর হবে বিরক্তিকর। অনেক সাইড দেখা যায় যারা হেডার, ফুটার, পোষ্ট সাউডবার থেকে শুরু করে সাইটে ২-৩ ইঞ্চি পর পর বিজ্ঞাপন দেয়। যা ভিজিটরের জন্য বিরক্তিকর। ওয়েবসাইটে যত কম বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা যায় তত ভালো।
তারপর ও ইনকাম এর দিক থেকে বিজ্ঞাপন প্রয়োজন হলেও সেটা যেনো ভিজিটরের বিরক্তির কারন না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি সাইটে পপ-আপ অ্যাড রাখার পক্ষপাতী না, এতে বাইন্সরেট বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/ad.png)
০৭. ভিজিটরদের অংশগ্রহনের ব্যবস্থা রাখা
যেকোনো ভাবে ওয়েবসাইটে ভিজিটদের অংশগ্রহনের ব্যবস্থা রাখলে সাইটের বাউন্স রেট বাড়ার চান্স কমে যায়। তা হতে পারে বিভিন্স পোল/সার্ভের মাধ্যমে। সাইটে কমেন্ট অপশন চালুর মাধ্যমেও ভিজিটর অংশগ্রহন বাড়ানো যায়। এতে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানো যাবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/comment.png)
০৮. সাইটটিকে অনুসন্ধান করা সহজ করন
সাইটটিকে অনুসন্ধান করা সহজ করতে হবে। বাউল রেড কমিয়ে আনা অন্যতম আরেকটি বিষয় হচ্ছে ওয়েবসাইটকে খুব সহজেই খুঁজে পাওয়ার উপযোগী করে তৈরি করা।এতে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানো যাবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/site.png)
০৯. মোবাইলের জন্য সাইটটিকে অপ্টিমাইজ করন
ওয়েবসাইটটি যাতে যে কোন ডিভাইস বা মোবাইলে খুব সহজেই দেখা যায় তার উপযোগী করে তৈরি করন। আজকাল সবাই মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই যেকোন ওয়েব সাইটকে মোবাইলে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করলে। ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট অনেক কমানো যাবে।
![](https://dpi.ac/wp-content/uploads/2022/08/site-optimization.png)
এছাড়াও বাউন্স রেট কমানোর আরো অনেক উপায় আছে । তবে এই উপায়গুলি ফলো করলে আশা করা যায় গুগলের এক নম্বর পেজ এ আসা সম্ভব এবং এটাকে কন্টিনিউ প্রসেসে যদি রাখা যায় তাহলে যে কোন ওয়েবসাইটকে বাউন্স রেট কমিয়ে খুব দ্রুত গুগলের এক নম্বরে অবস্থান করা এবং ধরে রাখা সম্ভব। আশা করি এই উপায়গুলি ফলো করে উপকৃত হবেন ।
ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকুন
সোর্স ঃ [wikipedia,Google,Md.Faruk khan ]
মুহাম্মাদ সহিদুল ইসলাম
ইনস্ট্রাক্টর(কম্পিউটার)