অতিরিক্ত X-ray মৃত্যুর কারণ-01

অতিরিক্ত X-ray মৃত্যুর কারণ

পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোট হয় পদার্থ ভেদ করার ক্ষমতা তত বেশি হয়। এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১০-৮মিটার থেকে ১০-১১ মিটারের কাছাকাছি। যা আলোর অনেক কম। সাধারণ চোখে দৃশ্যমানও নয়।

শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নির্ণয় করতে এক্স-রে বর্তমানে একমাত্র উপায়। হাড় ভেঙে যাওয়া থেকে শরীরের অভ্যন্তরে কোনও অসামঞ্জস্যতা থাকলে তা নির্ণয় করা যায়।

এক্স রে’র যেমন অনেক উপকারি দিক আছে, তেমনি এর ক্ষতিকর দিকও আছে। এটা আমরা হয়তো জানি-ই না।আমরা কোন কিছু হলেই ভাবি একটা এক্স রে করিয়ে দেখি তো, শরীরে কি সমস্যা। এইরকম মানুষজনের অভাব নেই। চারদিকে লাখে লাখে আছে।

যদিও বেশি এক্স-রে শরীরে প্রবেশ করলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।রেডিয়েশন থেরাপি ক্যানসার আক্রান্ত কোষের ডিএনএ ভাঙনের মাধ্যমে ক্যানসার কোষ ধ্বংস করে থাকে।কিন্তু এই রেডিওগ্রাফির ফলে আবার সুস্থ কোষের ডিএনএ ধ্বংস হবার সম্ভাবনাও থাকে।

চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ দেহে অত্যাধিক পরিমাণ এক্স-রে প্রবেশ করলে তা ক্যানসার কমিয়ে না দিয়ে বৃদ্ধি ঘটায়।

এক্স রে হল মূলতঃ এক প্রকার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন। এটা আমাদের শরীরে ডিএনএ তে পরিবর্তন ঘটায়। ফলে এটা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় । গবেষনায় দেখা গেছে এক্স রের রেডিয়েশন থাইরয়েড ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার এবং লিউকুমিয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এক্সরেকে ক্যান্সার ঘটার কারণ হিসেবে শ্রেনীবিভাগে করছে।

এক্স-রে, এমআরআইসহ নানা ধরনের মেডিক্যাল চেকআপ করাতে গিয়ে মানুষজন নিজের অজান্তেই শরীরে বয়ে নিয়ে আসছেন ঘাতক ব্যাধি বিশেষ। কোনও কারণে যদি কেউ নিয়মিত বা ঘন ঘন এক্সরে করেন, তার শরীরে রেডিয়েশন প্রবেশ করে চোখে ছানিপড়া, ক্যান্সার, গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব, মাথার চুল পড়ে যাওয়াসহ নানান জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এমনকি গর্ভাবস্থায় এটি হলে গর্ভস্থ শিশু বিকলাঙ্গ কিংবা প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও জন্মগ্রহণ করার ঝুঁকিতে থাকে।

রেডিওগ্রাফারদের নিষেধ সত্ত্বেও রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনরা ঢোকেন এক্স-রে কক্ষে। তারা নিজেরাও জানেন না যে, নিজেদের অজান্তেই তারা শরীরে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন ঘাতক ব্যাধির লক্ষণ।

লন্ডনে এমনও রয়েছে এক্স-রে কক্ষে ঢোকার আগেই রেডিয়েশন লেভেল চেক করে দেখা হয়। আবার বের হওয়ার সময়ও চেক করা হয়। আমাদের দেশে তো সে রকম সম্ভব না। কিন্তু যতটুকু পারা যায়, সেটুকুই মানা উচিত।

Zannatul Ferdous

Instructor of Physics

Daffodil Polytechnic Institute

Tags: No tags

Comments are closed.